Home Remedies For Headache: 20 Effective Natural Treatments

স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে যন্ত্রণা দূর করুন, স্বাস্থ্যের জন্য সহজ ও প্রাকৃতিক পরামর্শ।

Written by Dinesh
Last Updated on

দৈনন্দিন দৌড়ঝাঁপ, কাজের চাপ, ব্যস্ততার জীবনে মাথা ব্যথা বলা যায় আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আট থেকে আশি সকলেই মাথা ব্যথার শিকার হচ্ছে। মূলত আবহাওয়ার পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, অত্যধিক স্ট্রেস, খাওয়ার অনিয়ম, শারীরিক রোগ বহু কারণে মাথা যন্ত্রণা হতে দেখা যায়। দীর্ঘ সময় একভাবে কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করা কিংবা পেন খাতা নিয়ে লেখালেখি করা, ট্র্যাফিক জ্যামে অনেকক্ষণ আটকে থাকা কিংবা অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে থাকা সবকিছুই মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ধূমপান, দীর্ঘদিন ধরে ব্যথানাশক ওষুধের অত্যধিক ব্যবহার, শরীরে জলের অভাব, মাইগ্রেনের ফলে মাথাব্যথার সমস্যা শুরু হয়। তবে তৎক্ষণাৎ মাথা ব্যথাথেকে মুক্তি পেতে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকেন। যেগুলি শরীরের পক্ষে তৎক্ষণাৎ আরাম দিলেও খুবই ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে।সেজন্য ওষুধের দিকে না গিয়ে মাথা ব্যথা কমানোর জন্য বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি আছে যেগুলো ঠিক করে মেনে চললে মাথা ব্যথা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যাবে। মাথা ব্যথাযে কেবলমাত্র বড় দেরই হয় তা নয়, এটি ছোটদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রভাব ফেলে। তাই শুরুতেই যদি ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় এটি নির্মূল করা সম্ভব হয়। আসুন আজকের প্রতিবেদনে জেনে নিন, কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে মাথা ব্যথার প্রতিকার করবেন।

মাথা ব্যথার প্রকারভেদ : Types of Headache

আমাদের যে মাথা ব্যথা কষ্টের কারণ হয়ে ওঠে তা বহু ধরনের হয়ে থাকে। ধরন অনুযায়ী মাথাব্যথার কষ্ট পাওয়ার তীব্রতা বাড়ে-কমে। মাথাব্যথার ফলে মূলত মাথা, মাথার ত্বক এবং ঘাড়ে ব্যথার ফলে এক ধরনের অস্বস্তিকর শারীরিক অবস্থার সৃষ্টি হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মাথা ব্যথা হালকা হয়, আবার কিছু কিছু সময় তা মাথা ঘোরানো এবং মাথা ব্যথাএকসাথে হয়। এর ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে মাথা তুলে দাঁড়ানো কিংবা কোনো কাজ করা বিভীষিকার সমান হয়ে ওঠে। মাথা ব্যথা হলো মূলত মানসিক চাপ কিংবা স্ট্রেস এর লক্ষণ। উচ্চ রক্তচাপ, উদ্বেগ, হতাশা, মাইগ্রেনের ফলে মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে। মাথা ব্যথাপ্রাথমিক এবং মধ্যম ধরনের মধ্যে ভাগ করা হয়। প্রাথমিক মাথা ব্যথা হিসেবে গণ্য করা হয় মাইগ্রেন, টেনশন, ইত্যাদি মাথা যন্ত্রণা গুলিকে। এগুলির ফলে মাথা ব্যথাখুব বেশি গুরুতর না হলেও মূলত মাথার বিভিন্ন পেশি কিংবা ঘাড়ে ব্যথা হতে দেখা যায়। মূলত যা বাহ্যিক কারণে হয়ে থাকে কিংবা অত্যধিক টেনশন বা রোদের তাপে কিংবা মাইগ্রেনের সমস্যায় হয়ে থাকে।

অন্যদিকে মাথাব্যথার জন্য যদি কোন অন্তর্নিহিত কারণ থাকে সেক্ষেত্রে তাকে মধ্যম বা গৌণ মাথা ব্যথাহিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। এই জাতীয় মাথাব্যাথার ক্ষেত্রে কয়েকটি মূল কারণ হলো, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, মাথা ভার, মাথায় রক্ত জমাট, মস্তিষ্ক কিংবা তার চারপাশের কোথাও রক্তক্ষরণ, মস্তিষ্কের চলমানতা কমা, চোখের ছানি বৃদ্ধি পেলে, দাঁতের যন্ত্রণা হলে, অতিরিক্ত ব্যথার ওষুধ খেলে, আকস্মিক কোনও ব্যথা পেলে, মাথায় কিংবা ঘাড়ের ব্যথার কারণে। মূলত মাথার ব্যথা এই বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে।

আসুন জেনে নিন মাথা ব্যথার কয়েকটি সাধারণ প্রকারভেদ :

১) টেনশন জনিত কারণে মাথা ব্যথা :

আমাদের দিনের বেশিরভাগ সময়ই স্ট্রেস কিংবা টেনশনের কারণে এই মাথা ব্যথাহয়ে থাকে। মূলত দিনের মধ্যভাগ থেকে রাতের দিক পর্যন্ত এটি লক্ষ্য করা যায়।

লক্ষণ গুলি হল :

টেনশন জনিত কারণে মাথা ব্যাথার ক্ষেত্রে মনে হয় মাথার চারপাশে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। মাথার দু দিকে স্থির বা এক ধরনের চিনচিনে ব্যথা হয়। এই ব্যথা মাথার পিছন দিয়ে ঘাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

২) মাইগ্রেনের ফলে মাথা ব্যথা :

মাথাব্যথার প্রকারভেদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো মাইগ্রেন। মাইগ্রেনের ফলে মাথার ব্যথা মূলত একপাশে ঘটে। যার ফলে সেই জায়গায় প্রচন্ড যন্ত্রণা হওয়ার পাশাপাশি সেদিকে গলা পর্যন্ত ব্যথা প্রভাব বিস্তার করে।

লক্ষণ গুলি হল :

মাইগ্রেনের ব্যথার ক্ষেত্রে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে, আলোয় অতিরিক্ত মাথা যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়, অনেক সময় মাথা ব্যথার পাশাপাশি সংজ্ঞা হারানোর প্রবণতা থাকে।

৩) রিবাউন্ড মাথা ব্যথা:

এটি মূলত অতিরিক্ত ওষুধ ব্যবহারের ফলে ঘটিত মাথা ব্যথাহিসেবে পরিচিত। চিকিৎসার লক্ষ্যে ওষুধের অধিক ব্যবহারের ফলে কিংবা ব্যথানাশক ওষুধের অধিক ব্যবহারের ফলে এই ধরনের মাথা ব্যথালক্ষ্য করা যায়। এগুলি গৌন মাথা ব্যথাহিসেবে ধরা হয়। এই ধরনের মাথা ব্যথাযখন শুরু হয় সে ক্ষেত্রে সারাদিনে এটি চলতে থাকে। কেননা দীর্ঘদিন ওষুধ ব্যবহারের ফলে এটি সৃষ্টি হয়।

লক্ষণ গুলি হল :

মাথার পেছন দিক থেকে ব্যথা ঘাড় অবধি পৌঁছে যায়। শরীরে এক অস্থিরতা কাজ করে। সঠিকভাবে ঘুম হয় না। মাথার মধ্যে এক অস্বস্তিভাব কাজ করে।

৪) হালকা মাথা ব্যথা :

এ ধরনের মাথা ব্যথাসাধারণত পনেরো মিনিট থেকে তিন ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। এগুলি হঠাৎ কোন কারণে সৃষ্টি হতে পারে। তবে এটি দিনে এক থেকে চারবার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে এবং কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত চলতে পারে। এই মাথাব্যথার ক্ষেত্রে শরীরে খুব অস্বস্তি ভাব যে থাকে তা নয়, তবে মাথায় একটা হালকা ব্যথা কাজ করবে। মূলত দীর্ঘক্ষন কোন চিন্তার কারণে কিংবা মাথা নিচু করে বই পড়া কিংবা কোন জিনিস নিয়ে কাজ করার ফলে এ ধরনের  মাথা ব্যথাহতে পারে।

লক্ষণ গুলি হল :

এ ধরনের মাথাব্যথার ফলে চোখে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে চোখের চারপাশে ব্যথা হতে পারে। চোখ জ্বলার মতো সৃষ্টি হতে পারে। মাথায় কোন নির্দিষ্ট জায়গা, সামনে কিংবা কপালের পাস কিংবা মাথার পিছনে একনাগাড়ে ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও যে জায়গায় ব্যথা টা হচ্ছে সেই জায়গাটা লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে এবং চোখের পাতা ভারী হয়ে আসতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সর্দির ফলেও এ ধরনের মাথা ব্যথালক্ষ্য করা যায়।

৫) বজ্রপাতের মতো মাথা ব্যথা :

এ ধরনের মাথা ব্যথা গুলো হঠাৎ শুরু হয়ে মুহূর্তের মধ্যেই তীব্র আকার ধারণ করে। এছাড়া এই তীব্রতা পাঁচ মিনিটের বেশি সময় ধরে স্থায়ী থাকতে পারে। এগুলো মূলত মাথা ফেটে যাওয়া কিংবা মাথার ভিতর অন্য কোনো গুরুতর সমস্যার ক্ষেত্রে কিংবা ইন্টারনাল হেমারেজ, মেনিনজাইটিস, সেরিব্রাল অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের হঠাৎ অবনতি ঘটলে এধরনের মাথা ব্যথাঘটে। এ ধরনের মাথা ব্যথাঘটলে সত্বর চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

লক্ষণ গুলি হল :

হঠাৎ তীব্র মাথা যন্ত্রণা। চারিদিক অন্ধকার দেখা, মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাওয়ার প্রবণতা, জ্ঞান হারানোর মত পরিস্থিতি এ ধরনের মাথাব্যথার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়।

মাথা ব্যথার কারণ : Causes of Headache in Bengali

হঠাৎ করে কমবেশি মাথা ব্যথার সম্মুখীন আমাদের সকলেরই হতে হয়েছে। তবে হঠাৎ কী কারণে মাথা ব্যথার সৃষ্টি হয় সেই কারণই হয়ত আমাদের সকলের কাছেই সব সময় পরিষ্কার থাকে না। মূলত মস্তিষ্কের ক্রিয়া-কলাপের কিছু পরিবর্তন ঘটলে কিংবা মস্তিষ্কে উপস্থিত রক্তনালীর কোন হঠাৎ পরিবর্তন ঘটলেই এই মাথা ব্যথার মত পরিস্থিতি দেখা যায়। তবে মাথাব্যথার নির্দিষ্ট কারণটি এখনো আবিষ্কার করা যায়নি। তবে মাথাব্যথার জন্য আমাদের বেশ কিছু কারণ চোখের সামনেই রয়েছে। এক নজরে জেনে নিন ঠিক কী কী কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে ?

১) সর্দি, কাশি বা জ্বর থাকলে সে ক্ষেত্রে শরীর অসুস্থ হলে মাথা ব্যথার সমস্যা লক্ষ্য করা যায়।

২) কানের সংক্রমণ, গলার সংক্রমণ কিংবা সাইনোসাইটিসের মতন রোগ সংক্রমণ ঘটলে হঠাৎ স্বাস্থ্যের অবনতি হলে মাথা ব্যথা লক্ষ্য করা যায়।

৩) মানসিক চাপ কিংবা হতাশার কারণে মাথা যন্ত্রণার সৃষ্টি হতে পারে।

৪) আপনার পারিপার্শ্বিক পরিবেশও আপনার মাথা ব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে। অতিরিক্ত ধোয়া, দূষণ কিংবা জঞ্জাল পোড়ানো হতে থাকলে সে ক্ষেত্রে মাথা ভার কিংবা মাথা ব্যথার মত সমস্যা গুলি দেখা যায়।

৫) যেকোনো ধরনের দৃঢ় গন্ধ সম্পন্ন পারফিউম, ধুপকাঠি কিংবা সুগন্ধি ব্যবহারের ফলে হঠাৎ মাথা ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।

৬) দূষণ, জলবায়ুর পরিবর্তন, জোরে আওয়াজ, উজ্জ্বল আলো, গাড়ির আওয়াজ মাথা ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে।

৭) জিনগত কারনেও অনেক সময় মাথা ব্যথাহতে পারে। মূলত যাদের পারিবারিক ইতিহাসে পরিবারের অন্যান্য ব্যক্তিদের মাথা ব্যথা কিংবা মাইগ্রেনের মত সমস্যা রয়েছে সেক্ষেত্রে মাথা ব্যথার সমস্যা হতে পারে।

মাথা ব্যথা এমন একটি রোগ যেটি আপনাকে যথেষ্ট ভাবে দুর্বল করে দিতে পারে।এছাড়াও এর ফলে আপনার সারা শরীর প্রায় কার্যক্ষমতা হারায় এবং প্রতিদিনের কাজকর্ম আপনার করা অসম্ভব হতে পারে। তাই এমন কিছু করার চেষ্টা করুন যা ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোন ক্ষতি না করে আপনাকে মাথা ব্যথার থেকে প্রতিকার দেবে। আমাদের সকলের হাতের কাছেই এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যেগুলি শরীরের ক্ষতি না করে আমাদের মাথা ব্যথাকমাতে সাহায্য করবে। এক নজরে জেনে নিন এবার মাথা ব্যথা কমানোর সেই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি সম্পর্কে।

মাথা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় : Home Remedies for Headache in Bengali

আসুন আজ জেনে নিন ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোন কোন উপাদান গুলি ব্যবহার করে মাথা ব্যথার সমস্যা চিরতরে দূর করবেন।

১) ঠান্ডা ও গরম চিকিৎসা করে মাথা ব্যথা কমান : Hot Or Cold Therapy

মাথা ব্যথাহলে সেক্ষেত্রে সর্দি জনিত কারণে যদি মাথা ব্যথাহয় সে সময় যেকোনো ধরনের চা খুব উপকারী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। কিংবা মাথার তালুতে যদি দীর্ঘক্ষন ধরে ব্যথা হয় সেক্ষেত্রে আইসব্যাগ এর সাহায্যে তা মাথা ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। প্রথমে জেনে নিন কিভাবে গরম জিনিস ব্যবহার করে মাথা ব্যথা কমাবেন। (১)

কি কি জিনিস প্রয়োজন?

চা পাতা – পরিমান মত

চিনি – ১ চামচ

জল – ১ কাপ

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • জলের মধ্যে চা পাতা চিনি ফুটিয়ে গরম চা করে তৈরি করে ফেলুন।
  • এবার এটি গরম থাকতে থাকতেই খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • এবং এর গরম ভাপটি নাক দিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
  • এটি সর্দি জনিত কারণে যদি মাথা ব্যথার সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে আরাম দান করবে।

জেনে নিন আইস ব্যাগ ব্যবহার করে কিভাবে মাথা ব্যথা কমাবেন?

মূলত টেনশন কিংবা স্ট্রেস এর কারণে যে ধরনের মাথা ব্যথাহয় সে ক্ষেত্রে আইসব্যাগ এর ব্যবহার আরাম প্রদান করে।

প্রয়োজনীয় উপাদান?

আইসব্যাগ – একটি

বরফের টুকরো – আট-দশটি

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • বরফের টুকরো গুলো আইসব্যাগ এর মধ্যে ভরে আইসব্যাগ এর মুখটা বন্ধ করুন।
  • এবার এটি মাথার তালুতে দিয়ে কিছুক্ষণের জন্য চোখ বন্ধ করে বসে থাকুন।
  • কিছুক্ষণ বাদেই বুঝতে পারবেন মাথা ব্যথাআস্তে আস্তে কম হচ্ছে।
  • মাথা ব্যাথার সময় কখনোই শুয়ে পড়বেন না। সেক্ষেত্রে ব্যাথা আরো বেড়ে যাবে।

তাই একটি ব্যবহার করুন, কিছুক্ষণ বাদেই দেখতে পাবেন আস্তে আস্তে মাথা ব্যথা কম হতে শুরু করবে।

২) আদার সাহায্যে মাথা ব্যথাদূর করুন : Ginger

Ginger3
Image: Shutterstock

আদা চা যেকোনো ধরনের মাথা ব্যথাকমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আদা হল আমাদের হাতের কাছে থাকা একটি সহজলভ্য উপাদান। এটিকে আমরা প্রত্যেকের রান্নাঘরেই পেয়ে থাকি। এবার জেনে নিন কিভাবে আদার সাহায্যে মাথা ব্যাথার সমস্যার সমাধান করবেন? (২)

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

আদা – এক থেকে দুই ইঞ্চি

জল – এক কাপ

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • এক কাপ জলে আদার টুকরোটি ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে যোগ করুন।
  • এবার জলটি কয়েক মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন।
  • তারপর উনানের আঁচ বন্ধ করে দিন।
  • এবার এই মিশ্রণটি ফ্যানের তলায় রেখে একটু ঠাণ্ডা করে নিন।
  • এবার উষ্ণ গরম অবস্থায় চায়ের মতন করে পান করুন।
  • এটি প্রতিদিন সকালে এবং বিকেলে দুবার খেতে পারেন। এতে মাথায় কফ জমলে কিংবা মাথায় রক্ত জমাট হয়ে যাওয়ার কারণে বা অন্য কোনো সমস্যার জন্য যদি মাথা যন্ত্রণা হয় সেটি কমাতে সহায়তা করবে।

এর ফলে কি হবে? 

যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও মাইগ্রেনের মাথাব্যথার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধক হল আদা। এছাড়াও এটি রক্ত চলাচলকে ত্বরান্বিত করে, যার ফলে মস্তিষ্কে সঠিকভাবে রক্ত চলাচল সম্পন্ন হয়। যা মাথা ব্যথাকমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩) মাথা ব্যথা কমাতে পুদিনা পাতার ব্যবহার : Mint

অস্বস্তিকর মাথা ব্যথাকমানোর জন্য একটি অন্যতম ঘরোয়া উপাদান হলো পুদিনা পাতার রস। পুদিনা পাতার মধ্যে থাকা ম্যানথল ও ম্যানথন জাতীয় উপাদান গুলি মাথা ব্যথাদূরীকরণে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। এছাড়াও এটি শরীরে এক ধরনের আরামদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, যার ফলে মাথা ব্যথা থেকে খানিক রেহাই পাওয়া যায়।

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

পুদিনা পাতা – এক মুঠো

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • একমুঠো পুদিনা পাতা নিয়ে সেটি জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
  • কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর জল থেকে তুলে পুদিনা পাতা টাকে বেটে নিন।
  • এবার এই মিশ্রণটি সরাসরি আপনার কপালে লাগান, যেখানে ব্যথার প্রবণতা বেশি।
  • কিছুক্ষণ বাদে দেখবেন এক ধরনের স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে।
  • এছাড়াও পুদিনাপাতার চাও তৈরি করে খেতে পারেন।
  • এ ক্ষেত্রে এক কাপ জলে সাত-আটটি টি পুদিনা পাতা এবং হাফ চামচ মধু দিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন।
  • এটিও মাথা যন্ত্রণা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এর ফলে কি হবে? 

পুদিনা পাতার রস ব্যবহারের ফলে এটি যেমন মাথায় লাগানোর পরেও মাথার ব্যথা কমতে শুরু করবে এবং পুদিনা পাতা দিয়ে তৈরি চা পান করলেও এটি এক ধরনের মানসিক শান্তি প্রদান করবে। যা শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি ঘটাতে সহায়তা করবে।

৪) তুলসী দিয়ে করুন মাথা ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকার : Basil

অনেক সময় মাথায় সর্দি জমে গেলে কিংবা দীর্ঘদিন কাশির ফলে মাথা যন্ত্রণা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে তুলসী এ ধরনের মাথা ব্যথাকমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তুলসীর মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান সর্দির ভাইরাসকে ধ্বংস করে শ্লেষ্মাকে পাতলা করতে সহায়তা করে। যার ফলে মাথা হালকা হতে শুরু করে। মাথা ব্যথাকমাতে তুলসী পাতার চা ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কি কি উপাদান প্রয়োজন? 

তুলসী পাতা –  পাঁচ ছয়টি

জল – এক কাপ

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • এক কাপ জলে পাঁচ-ছয় টি তুলসী পাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।
  • যতক্ষণ না জলের রং হালকা সবুজ হচ্ছে ফুটাতে থাকুন।
  • এরপর অল্প ঠান্ডা করে উষ্ণ অবস্থায় এই জল পান করুন।
  • এবার দেখতে পাবেন আস্তে আস্তে এটি মাথায় শান্তি প্রদান করছে এবং কফের সমস্যা থাকলে সেটি বের হতে থাকবে।
  • দিনে দুবার এটি ব্যবহার করুন।

এর ফলে কি হবে? 

মাথায় সর্দি জমে যদি মাথা ব্যথার সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে তুলসী তা কমাতে সহায়তা করবে। এর পাশাপাশি জমে থাকা শ্লেষ্মাকেও তরল হিসেবে বের করে দিতে সহায়তা করবে।

৫) পিপারমেন্ট তেল দিয়ে কমান মাথা ব্যথা:  Peppermint Oil

Peppermint Oil3
Image: Shutterstock

মূলত মানসিক চাপ, হতাশা, পরিবেশ দূষণ কিংবা শারীরিক দুর্বলতার প্রকাশ হিসেবে মাথা ব্যথালক্ষ্য করা যায়। মাথা ব্যথাকমাতে আমাদের হাতের কাছে বহু ঘরোয়া জিনিস রয়েছে। যেগুলি ওষুধের মতন ক্ষতি না করে প্রাকৃতিক উপায়ে মাথা ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। ঘরোয়া জিনিস গুলির মধ্যে অন্যান্য একটি উপাদান হলো পিপারমেন্ট তেল। এটি টেনশন জনিত মাথা ব্যথায় ম্যাজিকের মতন কাজ করে থাকে। (৩)

কী কী উপাদান প্রয়োজন :

পিপারমেন্ট তেল – তিন ফোঁটা

নারকেল তেল বা অন্য কোন ক্যারিয়ার তেল – দু’চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • যেকোন বাহক তেল এক থেকে দুই চামচ নিয়ে তার মধ্যে দুই থেকে তিন ফোটা পিপারমেন্ট তেল যোগ করুন।
  • এবার এটি ভাল করে মিশিয়ে নিন।
  • তারপর কপালে ভালো করে লাগিয়ে ফেলুন।
  • যখনই মাথাব্যথার শুরু হচ্ছে মনে হবে তখনই এটি ব্যবহার করুন। তাহলে শুরুতেই মাথা ব্যথাকমে যাবে এবং একটি আলাদা অনুভুতি হবে।

এর ফলে কি হবে? 

মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে পিপারমেন্ট তেল প্যারাসিটামল এর মতন কাজ করে। এর কোনো ক্ষতি কর প্রভাব পড়ে না। এটি অ্যারোমেটিক উপায়ে মাথা যন্ত্রণা কমাতে সহায়তা করে।

৬) মাথা ব্যথাকমাতে যষ্টিমধুর ভূমিকা : Licorice Root

মাথা ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকার করতে যষ্টিমধু হলো অন্যতম একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এটি লজেন্সের মতো কিংবা চা বানিয়ে কিংবা এর তেল খাওয়া যায়। মূলত মাথা ব্যথা, হাইপারটেনশন, পেশির দুর্বলতা, শরীরে পটাশিয়ামের ভাগ কমে গেলে কিংবা হূদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিলে এটি গ্রহণ করা যেতে পারে। টেনশন কমাতে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে যষ্টিমধু। যার ফলে এটি মাথা ব্যথা নাশক হিসেবেও পরিচিত। জেনে নিন কিভাবে যষ্টিমধু দিয়ে মাথা ব্যথা কমাবেন?

কি কি উপাদান প্রয়োজন? 

যষ্টিমধু – একটুকরো

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • মাথা ব্যথাহলে এক টুকরো যষ্টিমধু লজেন্সের মতন মুখে নিয়ে খেতে পারেন।
  • অথবা এক কাপ জলে যষ্টিমধু দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে যদি সেবন করতে পারেন এটি মাথা ব্যথার হাত থেকে তৎক্ষণাৎ আরাম দেবে।
  • টেনশন বা হাইপারটেনশন এর কারণে যদি কোনরকম মাথা ব্যথাহয় সে ক্ষেত্রে যষ্টিমধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • এটি দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে পারেন।

এর ফলে কি হবে? 

যষ্টিমধু খাওয়ার ফলে মাথা ব্যথাতো কমবেই, তার সাথে মাথায় কোনো রকমের খিঁচুনি ভাব দেখা দিলে সেটার থেকেও নিস্তার পাওয়া যাবে।

৭) মাথা ব্যথা কমাতে রোজমেরির ভূমিকা : Rosemary

একটি অন্যতম সুগন্ধি দ্রব্য হল রোজমেরি। এটি মাথা ব্যথা, গলা ব্যথার মতন সমস্যাগুলির সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি দিয়ে চা তৈরি করে খেলে কিংবা রোজমেরি তেল প্রাচীন সময় থেকে মাথা ব্যাথার সমস্যার সমাধান করে আসছে। এছাড়া এটি শরীরে ব্লাড সার্কুলেশন পদ্ধতিকেও উন্নত করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে কোন ধরনের ব্যথা এবং মাথা ব্যথার মতন রোগগুলি সমাধান করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে রোজমেরি অয়েল। মাইগ্রেনের ব্যথা এবং টেনশনের কারণে যে মাথা ব্যথা দেখা যায় সেগুলি কমাতেও রোজমেরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জেনে নিন কিভাবে রোজমেরি দিয়ে মাথা ব্যথাকমাবেন?

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

রোজমেরি তেল – ২-৪ ফোটা

নারকেল তেল বা যেকোনো বাহক তেল – ১ চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • এক চামচ বাহক তেলের সাথে দু-তিন ফোঁটা রোজমেরি তেল মিশিয়ে একটি ভালো করে মিশ্রন তৈরি করুন।
  • এবার এটি কোনও পাতলা কাপড়ে নিয়ে নাকের সামনে নিয়ে ঘ্রান নিন।
  • এছাড়া এটি স্নানের জলে ও ব্যবহার করতে পারেন।
  • অ্যারোমাথেরাপিতে রোজমেরি একটি গুরুত্বপূর্ণ তেল, যা ব্যথার চিকিৎসায় কিংবা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে এবং মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথার উপশম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • স্ট্রেস বা উদ্বেগ রোধ করার জন্যেও রোজমেরির ব্যবহার করা হয়।
  • এটি দিনে দুবার ব্যবহার করতে পারেন।

এর ফলে কি হবে? 

এটি ব্যবহারের ফলে মাইগ্রেন বা স্ট্রেস জনিত কারণে যে মাথা ব্যথা হয় তা সম্পূর্ণ কমে যাবে এবং কোনো কারণে যদি মাথায় রক্ত সঞ্চালন সঠিক ভাবে না হয় সেক্ষেত্রেও বেশি ফুলে গিয়ে মাথা ব্যথাদেখা যেতে পারে সেই সমস্যার সমাধান ঘটাবে।

৮) লবঙ্গ দিয়ে চিরতরে কমান মাথা ব্যথা: Cloves

Cloves2
Image: Shutterstock

মাথা ব্যথাএবং মাথার যেকোন ধরনের যন্ত্রণা কমাতে একটি অন্যতম উপাদান হলো লবঙ্গ। এটি মাথা যন্ত্রণা কমিয়ে একটি ঠাণ্ডা অনুভূতি প্রদান করে। এর মধ্যে থাকা উপাদান গুলি মাথা যন্ত্রণা কমিয়ে সেখানে একটি আরামদায়ক অনুভূতি প্রদান করে। লবঙ্গ বহু কাজে ব্যবহার হয়। অ্যারোমেটিক উপাদান গুলির মধ্যে অন্যতম এটি। এর গন্ধ নেওয়ার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। জেনে নিন কিভাবে লবঙ্গের সাহায্য মাথা ব্যথাকমাবেন?

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

লবঙ্গ – চার-পাঁচ টুকরো

পরিষ্কার রুমাল – একটি

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • লবঙ্গ গুলো শক্ত কোনও জিনিস দিয়ে পিষে নিন।
  • তারপর পরিষ্কার রুমালের ভেতর সেটা রেখে নাক দিয়ে ঘ্রাণ নিন।
  • এভাবে ঘ্রাণ নিতে নিতে মাথা ব্যথাকমবে। একটি আরামদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

এর ফলে কি হবে? 

লবঙ্গের মধ্যে উপস্থিত উপাদান গুলি মাথা ব্যথাএবং মাথা যন্ত্রণা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাথা ব্যথার সমস্যা দেখা দিলে উপরিউক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিনা ওষুধ সেবন করে মাথা ব্যথাকমানো যাবে।

৯) মাথা ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকারে  ল্যাভেন্ডার অয়েলের ভূমিকা : Lavender Oil

ল্যাভেন্ডার অয়েল হল অন্যতম একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যেটি মাথা ব্যথামাইগ্রেনের ব্যথা, যেকোনো ধরনের টেনশন কিংবা উদ্বেগ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি দিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাথা ব্যথার সমস্যা সমাধান করা যায়। (৪)

কি কি উপাদান প্রয়োজন? 

ল্যাভেন্ডার তেল –  দুই-তিন ফোঁটা

একটি পাত্র

জল

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • একটি পাত্রে জল নিয়ে সেটি উনানে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।
  • এবার গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে তারমধ্যে দু-তিন ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল দিয়ে নিন।
  • এবার মাথা নিচু করে পাত্রের সামনে এসে সেটা থেকে ঘ্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করুন।
  • সেই ঘ্রানটি নিলে পড়ে মাথা ব্যথাথেকে সত্বর রেহাই পাবেন।
  • এটি দিনে ২ থেকে ৩ বার করতে পারবেন।

এর ফলে কি হবে? 

ল্যাভেন্ডার তেল ব্যবহারের ফলে মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা কমার পাশাপাশি এটি যেকোনো ধরনের চাপ এবং উদ্বেগ দূর করতে সহায়তা করবে। অ্যারোমা চিকিৎসায় ল্যাভেন্ডার তেলের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

১০) আপেল সিডার ভিনিগার দিয়ে মাথা ব্যথা কমান : Apple Cider Vinegar

মাথা ব্যথাকমাতে আপেল সিডার ভিনেগারের গুরুত্ব গবেষণায় প্রমাণিত না হলেও এটি ব্যক্তিদের নিজস্ব ব্যবহারের ফলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মাইগ্রেনের মত জটিল ধরনের মাথা ব্যথাকমাতে বা টেনশন জনিত কারণে হওয়া মাথাব্যথার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘনঘন যাদের মাথা ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাদের মাথা ব্যথাকমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখলে ডায়েট অনুসরণ করে চলা যায়। এবার জেনে নিন কিভাবে আপেল সিডার ভিনেগার এর সাহায্যে মাথা ব্যথাকমাবেন?

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

অ্যাপেল সিডার ভিনিগার – দু’চামচ

হালকা গরম জল

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • এক গ্লাস হালকা গরম জলে দুই চামচ আপেল সিডার ভিনিগার ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন।
  • এবার এই মিশ্রণটি পান করুন।
  • দিনে এক থেকে দুই বার এটি ব্যবহার করতে পারেন।

এর ফলে কি হবে? 

এটি ব্যবহার করার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি ঘটবে এবং মাইগ্রেন কিংবা চাপের কারণে যেসব মাথা ব্যথা হয় সেগুলির সমাধান হবে।

১১) মাথা ব্যথা কমাতে লেবুর ভূমিকা : Lemon

মাইগ্রেন জনিত কারনে হওয়া মাথা ব্যথা কমাতে ব্যবহারকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান হলো লেবু। এর সাথে যদি কিছু পরিমাণ লবণ যোগ করা যায় সেটিও এই ব্যথা কমাতে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মূলত লেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রাস জাতীয় উপাদান এবং লবণের মধ্যে থাকা ম্যাগনেসিয়াম যেকোনো ধরনের ব্যথা বা প্রদাহ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক নজরে দেখে নিন কিভাবে এটি ব্যবহার করবেন?

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

লেবু – একটি

সামুদ্রিক লবণ – ২ চা চামচ

জল – এক গ্লাস

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • একটি লেবু থেকে ভালো করে রস বার করে নিন।
  • এবার তার মধ্যে সামুদ্রিক লবণ টি মিশিয়ে দিন।
  • এবার এই মিশ্রণটি একগ্লাস জলে ঢেলে ভালো করে মিলিয়ে খেয়ে নিন।
  • দিনে একবার এটি পান করতে পারবেন।

এর ফলে কি হবে? 

মাইগ্রেনের সমস্যায় যারা জর্জরিত তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল লেবু।

১২) চন্দন গুঁড়ো দিয়ে কমান মাথা ব্যথা: Sandalwood

অ্যারোমা চিকিৎসায় যে কোন ধরনের গন্ধদ্রব্যকেই বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। গন্ধ চিকিৎসার মাধ্যমে মাথা ব্যথাকমাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো চন্দন। এটির সুন্দর গন্ধ নেওয়ার ফলে যে কোনো ধরনের মাথাব্যথা, চিন্তা কিংবা উদ্বেগ কমে গিয়ে মাথায় এক আরামদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এছাড়াও চন্দনের তেল এর ঘ্রান নিয়ে মাথা ব্যথাকমাতে পারেন। এটি যে কোনো ধরনের উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

চন্দন তেল – কয়েক ফোঁটা

গরম জল

চন্দন গুঁড়ো – পরিমাণমতো

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • প্রথমে এক বাটি জল ভালো করে ফুটিয়ে নিন।
  • এবার উনানের আঁচ বন্ধ করে সেই ফুটন্ত জলে কয়েক ফোঁটা চন্দন তেল দিয়ে নিন।
  • এরপর সেই পাত্রের ওপর মাথা নিচু করে ভালো করে সেটির ঘ্রাণ নিন।
  • সম্ভব হলে বেশ কিছুক্ষণ টানা এই ঘ্রান নিতে থাকুন। দেখবেন খুব কম সময়ের মধ্যেই মাথা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
  • এছাড়াও চন্দন গুঁড়ো জলের সাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে সেটি কপালে লাগিয়ে রাখতে পারেন।
  • শুকিয়ে যাওয়া অবধি অপেক্ষা করুন। দেখবেন মাথা যন্ত্রণা থেকে পরিত্রান পেয়েছেন।

এর ফলে কি হবে? 

চন্দনের সুন্দর গন্ধ মাথা যন্ত্রণা এবং চাপ কমিয়ে একটি আরামদায়ক মানসিক অবস্থার সূচনা ঘটায়।

১৩) মাথা ব্যথাকমাতে সরষের তেলের ভূমিকা : Mustard Oil

সরষে থেকে তৈরি হাওয়া সরষের তেল মাথায় ব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। এটি মূলত রক্ত সঞ্চালনকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও এটি শরীরে যথাযথ অক্সিজেন প্রদান করে থাকে। এছাড়াও এর মধ্যে থাকা উপাদান গুলি শরীরের যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। এছাড়া এটি যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস ইনফেকশন এর বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। এছাড়াও মাথার যন্ত্রনা কিংবা অস্বস্তি ভাব কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও সর্দি-কাশি গলা ব্যথার সমস্যার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

সরষের তেল – দু’চামচ

ছোট বাটি – একটা

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • উনানে প্রথমে একটা বড় পাত্রে জল গরম করতে বসিয়ে দিন।
  • এবার সেই জলটি ফুটে গেলে তার মধ্যে ছোট বাটিতে করে সরষের তেল রাখুন অর্থাৎ ডবল বয়লার পদ্ধতিতে সরষের তেল গরম করে নিন।
  • এবার সেটি আস্তে আস্তে অল্প ঠান্ডা হলে অর্থাৎ উষ্ণ অবস্থায় মাথায় মাসাজ করতে থাকুন।
  • মাথার কপালের পাশাপাশি মাথার স্ক্যাল্পেও ম্যাসাজ করতে পারেন। যার ফলে মাথা ব্যথার সমস্যা দূর হবে।

এর ফলে কি হবে? 

সরষের তেল মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা কমানোর পাশাপাশি সর্দি কাশি জনিত কারণে যদি মাথা ব্যথাহয় সেটি কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা সরষের তেল মাসাজ করলে সেখানে মাথায় জমা শ্লেষ্মা হালকা হতে থাকে, যার ফলে মাথার ব্যথা কমতে শুরু হয়।

১৪) মাথা ব্যথা কমাতে দারুচিনির ভূমিকা : Cinnamon

Cinnamon3
Image: Shutterstock

টেনশন, চাপ বা উত্তেজনার কারণে যেসব মাথা ব্যথাহয় সেগুলি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে দারচিনি। এর মধ্যে থাকা উপাদান গুলি মাথা ব্যথার থেকে মুক্তি প্রদান করে থাকে। জেনে নিন আপনার হাতের কাছে থাকা এই উপাদান দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে সহজে মাথা ব্যথাকমাবেন?

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

দারচিনি –  দুই টুকরা

জল – অল্প পরিমাণে

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • দারচিনি টুকরোগুলো ভালো করে মিক্সিতে গুঁড়ো করে নিন।
  • এবার এইগুঁড়ো গুলোর মধ্যে অল্প পরিমাণে জল দিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন।
  • এবার আপনার কপালে এবং মাথার দুপাশে ভালো করে লাগিয়ে রাখুন।
  • মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট এর জন্য শুয়ে থাকুন এবং তারপর উষ্ণ গরম জল দিয়ে কপালটা ধুয়ে নিন।
  • দিনে দুবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।

এর ফলে কি হবে? 

যারা মাথাব্যথার সমস্যায় বহুদিন ধরে ভুগছেন তারা দৈনিক এটি ব্যবহার করতে পারেন। তাতে খুব শীঘ্রই মাথা যন্ত্রণা কমে যাবে।

১৫) ক্যামোমিল চা দিয়ে কমান মাথা ব্যথা: Chamomile Tea

মাথা ব্যথার ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপাদান গুলির মধ্যে অন্যতম একটি উপাদান হলো ক্যামোমিল চা। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদানগুলি একটি আরামদায়ক অনুভূতি প্রদান করে থাকে। মাথা যন্ত্রণা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জেনে নিন কিভাবে ক্যামোমিল চা দিয়ে মাথা যন্ত্রণা কমাবেন?

কী কী উপাদান প্রয়োজন? 

ক্যামোমিল চা ব্যাগ – একটি

জল – এক কাপ

কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

  • এক কাপ গরম জলে ক্যামোমিল চা ব্যাগটি দিয়ে ১০ মিনিট ধরে জলটা ফুটিয়ে নিন।
  • এরপর এটি পান করুন।
  • প্রয়োজনে এর মধ্যে অল্প পরিমাণে মধু যোগ করতে পারেন।
  • এই চা টি  দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। দেখবেন মাথা ব্যথাসম্পূর্ণ সেরে গেছে।

এর ফলে কি হবে? 

মাথা ব্যাথার সমস্যার থেকে দ্রুত মুক্তি পাবেন।

১৬) মাথা ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকারে কফির ভূমিকা : Coffee

মাথা ব্যথাকমাতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুটি পানীয় উপাদান হলো  চা এবং কফি। এই দুটোই মাথা ব্যথার ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া কফির মধ্যে থাকা ক্যাফিন এর মধ্যে বিভিন্ন বেদনানাশক উপাদান গুলি রয়েছে যেগুলি মাথা ব্যথাকমাতে কিংবা মাথাব্যথার চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এবার জেনে নিন কিভাবে কফি দিয়ে মাথা ব্যথাকমাবেন? (৫)

Was this article helpful?
thumbsupthumbsdown

Community Experiences

Join the conversation and become a part of our vibrant community! Share your stories, experiences, and insights to connect with like-minded individuals.

Latest Articles